শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ০৩:১২ পূর্বাহ্ন
উল্লেখ্য, রেলওয়ের তিন হাজার কোটিরও বেশি টাকার ভূমি অবৈধ দখলদারদের কবলে রয়েছে। বৈধতার আড়ালেও চলছে কোটি কোটি টাকার অবৈধ বাণিজ্য। নানা কৌশলে ভূমি দখল, বিদ্যুৎ চুরির মহোৎসব অব্যাহত রয়েছে। চট্টগ্রাম রেলকে ঘিরে গড়ে উঠা ‘মাফিয়া চক্র’ কোটি কোটি টাকার হরিলুটও চালাচ্ছে। এক বছর মেয়াদে লিজ নেয়া হয়েছে রেল থেকে। কেউ কেউ নিয়েছে কৃষি লিজ। কিন্তু এই লিজকৃত ভূমিতে মার্কেট তৈরি করে শত কোটি টাকার দোকান বিক্রি করে দেয়া হয়েছে। নগরীর প্রাণকেন্দ্র আইস ফ্যাক্টরি রোডে রেলওয়ের কয়েকশ’ কোটি টাকার জায়াগা লিজ নিয়ে মার্কেট নির্মাণ করা হয়েছে। সংঘবদ্ধ একটি চক্র রেলওয়ের কোটি কোটি টাকার সম্পত্তি নানা পন্থায় লোপাট করছে। রেলওয়ের ওই শীর্ষ কর্মকর্তার ভাষায়- ‘ওরা মাফিয়া’। এদের অপতৎপরতার কাছে পুরো রেলওয়ে জিম্মি।
অনুসন্ধানে জানা যায়, রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের আওতাধীন চট্টগ্রাম, ফেনী, নোয়াখালী, চাঁদপুর, কুমিল্লা ও ব্রাম্মণবাড়িয়ার গঙ্গাসাগর এলাকা নিয়ে রেলের চট্টগ্রাম বিভাগ। চট্টগ্রাম বিভাগে রেলের মোট ভূ-সম্পত্তির পরিমাণ ৭২৭১.৭৩ একর। এরমধ্যে রেলওয়ে স্টেশন, রেল লাইনসহ অপারেশনাল কাজে ব্যবহৃত হয় ৪৩৯৬ একর। অবশিষ্ট ২৮৭৫.৭৩ একর ভূমি রেলের কোন কাজে ব্যবহৃত হয় না। এরমধ্যে ১৫৭৮.২৬ একর ভূমি বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের কাছে ইজারা দেয়া হয়েছে। এরমধ্যে বাণিজ্যিক কাজে ব্যবহারের জন্য ইজারা দেয়া হয়েছে ৪৫৪.৬২ একর। কৃষি কাজের জন্য ইজারা দেয়া হয়েছে ৯০৮.৪৭ একর। মৎস্য খাতে দীঘি ও পুকুর হিসেবে ইজারা দেয়া হয়েছে ১৭০.৩৩ একর। নার্সারীর জন্য ইজারা দেয়া হয়েছে ১.৬১ একর। সিএনজি স্টেশনকে ইজারা দেয়া হয়েছে ৫.৫৯ একর। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে ইজারা দেয়া হয়েছে ৩৭.৬৪ একর। এর বাইরে অন্তত তিন হাজার কোটি টাকার ১৬৯.৮২ একর ভূমি অবৈধ দখলদারদের কবলে আছে। নগরীর আইস ফ্যাক্টরি রোড, কদমতলী, পাহাড়তলী, টাইগার পাস, খুলশী, আমবাগান, আকবর শাহ, ফয়’স লেকসহ বিভিন্ন এলাকায় রেলওয়ের মূল্যবান জমি নিয়ে সংঘবদ্ধ চক্রের অপতৎপরতা চলে আসছে বহুদিন ধরে।
রেলের জমিতে বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানের অফিস করেছে। ভারতীয় সহকারি হাই কমিশনের বিপরীতে রাস্তার পাশের এসব দোকানের এক একটি দুই তিন লাখ টাকা দরে বিক্রি করা হয়েছে বলেও স্থানীয়রা জানিয়েছে।